Abstract:
কৈবর্ত নামক বাংলার একটি প্রাচীন জনগোষ্ঠী সংস্কৃতায়ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কিভাবে নিজেদের আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটায়, “কৈবর্ত জাতিবর্ণের সংস্কৃতায়নের ইতিহাস “[History of Sanskritization of Kaibarta Caste]” শীর্ষক অভিসন্দর্ভে সেই ইতিহাস ধারণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। অভিসন্দর্ভটি মোট ছয়টি অধ্যায়ে বিন্যস্ত। এর মধ্যে প্রথম অধ্যায়টি ‘ভ‚মিকা’ এবং শেষ অধ্যায়টি ‘উপসংহার’। অবশিষ্ট চারটি অধ্যায়ের প্রথমটিতে কৈবর্ত জাতিবর্ণের আত্মপরিচয় অনুসন্ধান করা হয়েছে, দ্বিতীয় অধ্যায়ে দেখা হয়েছে সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে জাতিবর্ণটির প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ, সময়ের ব্যবধানে কৈবর্ত জাতিবর্ণ কিভাবে তাদের সাংস্কৃতিক জীবনের পরিবর্তন ঘটায় তা তৃতীয় অধ্যায়ের আলোচ্য এবং চতুর্থ অধ্যায়ে উপস্থাপিত হয়েছে কৈবর্ত জাতিবর্ণের সামাজিক জঙ্গমতা।
অর্বাচীন কিছু হিন্দু শাস্ত্রে কৈবর্তকে বর্ণসংকর হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা মর্যাদাহানিকর। উল্লিখিত শাস্ত্রসমূহের পাশাপাশি নানা ধরনের প্রাথমিক ও সহায়ক উপকরণ বিশ্লেষণের পরে এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছানো গেছে যে, কৈবর্ত হলো প্রাচীন বাংলার একটি স্বতন্ত্র জনজাতি বা কৌম, কালμমে যারা একাধিক জাতিবর্ণ পরিচয়ে বৃহত্তর হিন্দু সমাজের অংশ হয়।
কৈবর্তরা কিভাবে নিজেদের সামাজিক মর্যাদার ব্যাপারে সচেতন হয় এবং নিজেদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠে, সে ব্যাপারে ব্রিটিশ শাসন-আমলের বহু দালিলিক সাক্ষ্য পাওয়া যায়। ১৮৯১ সালের আদমশুমারি প্রতিবেদনে বাংলার জাতিবর্ণগুলোর যে মর্যাদাμম প্রকাশিত হয় যেখানে কৈবর্ত জাতিবর্ণকে মর্যাদাহীন দেখানো হয়েছে। এর প্রতিμিয়ায় কৈবর্ত জাতিবর্ণকে কয়েক বছর ধরে সংগঠিতভাবে আন্দোলন করতে দেখা যায়। এই আন্দোলনের ফলে কৈবর্তদের কৃষিজীবী অংশ ১৯১১ সালে মাহিষ্য পরিচয় লাভ করে এবং সাধারণ হিন্দু তথা বর্ণহিন্দু হিসেবে নিজেদের চিহ্নিত করাতে সক্ষম হয়। তবে কৈবর্তদের একাধিক মৎস্যজীবী অংশ পূর্বের পরিচয়ে থেকে যায় এবং ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন অনুযায়ী তারা তফসিলি শ্রেণির হিন্দু হিসেবে পরিচিতি পায়।
এই গবেষণায় উনিশ শতক থেকে শুরু করে একুশ শতকের প্রথম দুই দশক পর্যন্ত কৈবর্ত জাতিবর্ণের সামাজিক জঙ্গমতাকে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা সম্ভব হলো। কৈবর্ত জাতিবর্ণের সামাজিক জঙ্গমতা তাদের সংস্কৃতায়ন প্রক্রিয়ার পরিপূরক। গবেষণায় দেখা গেছে, সময়ের
পরিবর্তনে কৈবর্তদের পরিচয়ের পরিবর্তন হয়েছে, সামাজিক মর্যাদার পরিবর্তন হয়েছে, বসতির পরিবর্তন হয়েছে, পেশা-বৃত্তির পরিবর্তন হয়েছে, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার পরিবর্তন হয়েছে, অর্থনৈতিক অবস্থারও পরিবর্তন হয়েছে।
Description:
This Thesis is Submitted to the Institute of Bangladesh Studies (IBS) , University of Rajshahi, Rajshahi, Bangladesh for The Degree of Doctor of Philosophy (PhD)